বায়ু দূষণের কারণে বিশ্বের বড় শহরগুলোর মধ্যে দিল্লি এবং বেজিং সবচেয়ে বেশি পরিচিত। দুটি শহরেই বায়ু দূষণের স্তর বিপদজনকভাবে উচ্চ। তবে, সম্প্রতি বেজিং তার কঠোর নিয়ন্ত্রণ, উন্নত প্রযুক্তি এবং নতুন নীতির মাধ্যমে পরিস্থিতি মোকাবিলা করতে সক্ষম হয়েছে। অন্যদিকে, দিল্লি এখনও তার দূষণ নিয়ন্ত্রণে বড় চ্যালেঞ্জের মুখোমুখি, যেখানে দিল্লির বায়ু গুণমান আরও খারাপ হয়েছে।
বেজিং কীভাবে এক দশকে বায়ু দূষণ ৮৯% কমিয়েছে?
বিশেষ করে, ২০১৩ সাল থেকে বেজিং সূক্ষ্ম কণার দূষণ ৬৪% এবং সালফার ডাইঅক্সাইড ৮৯% কমাতে সক্ষম হয়েছে। এর পেছনে একাধিক পদক্ষেপ কাজ করেছে:
-
- কোল-টু-গ্যাস নীতি: ২০০৫ সাল থেকে, বেজিং “কোল-টু-গ্যাস” নীতি চালু করে, যার মাধ্যমে কয়লা পোড়ানো কমানো হয়েছে। ২০১৭ সালের মধ্যে, শহরটি ১১ মিলিয়ন টন কয়লা পোড়ানো কমাতে সফল হয়েছে, যা দূষণ কমাতে সাহায্য করেছে।
- উচ্চ দক্ষতার বর্জ্য ব্যবস্থাপনা: শিল্পকেন্দ্রগুলোর জন্য উচ্চ দক্ষতার বর্জ্য-ব্যবস্থাপনা এবং কঠোর নীতির মানদণ্ড করা হয়েছে।
- যানবাহন দূষণ নিয়ন্ত্রণ: বেজিংয়ে গাড়ির সংখ্যা বাড়লেও, শহরটি নতুন এবং পুরোনো যানবাহনের জন্য কঠোর ধোঁয়া নির্গমন মান এবং জ্বালানি গুণমান নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা নিয়েছে। এর ফলে, যানবাহন থেকে নির্গত দূষণ অনেকটাই কমেছে।
- শক্তিশালী পরিবহন ব্যবস্থাপনা: বেজিং ট্রাফিক ব্যবস্থা উন্নত করেছে এবং যান চলাচলে নিয়ন্ত্রণ বাড়িয়েছে, যা দূষণ কমাতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে।
অন্যদিকে, দিল্লির বায়ু গুণমান নিয়ন্ত্রণের অনেক চ্যালেঞ্জ রয়েছে, যার মধ্যে রয়েছে:
-
- গাড়ির সংখ্যা বৃদ্ধি: দিল্লির গাড়ির সংখ্যা ব্যাপকভাবে বেড়েছে, কিন্তু শহরের পরিবহন অবকাঠামো সেই তুলনায় যথেষ্ট উন্নত নয়। এর ফলে যানজট এবং বায়ু দূষণ বেড়েছে।
- কৃষি পোড়ানো: দিল্লির আশেপাশের রাজ্যগুলোতে কৃষকরা শীতকালে তাদের ফসল পোড়ান, যার ফলে তৈরি হওয়া ধোঁয়া দিল্লির বায়ু গুণমানকে আরও খারাপ করে তোলে।
- শিল্পায়ন এবং নির্মাণ কাজ: দিল্লিতে দ্রুত শিল্পায়ন এবং নির্মাণ কাজের কারণে বায়ুতে ধুলার মাত্রা বেড়েছে, যা দূষণ আরও বাড়িয়েছে।
- অবকাঠামোগত সমস্যাগুলি: দিল্লির বিদ্যমান বায়ু চলাচল ব্যবস্থা দূষণ দূরীকরণের জন্য যথেষ্ট কার্যকর নয়। রাস্তার ধুলো দিল্লিতে PM2.5 এর দ্বিতীয় বৃহত্তম উৎস, যার ফলে দূষণের মাত্রা অব্যাহত রয়েছে।
যদিও দিল্লি সরকার ২১-পয়েন্টের একটি শীতকালীন পরিকল্পনা ঘোষণা করেছে যা বায়ু দূষণ কমাতে সাহায্য করবে। দিল্লির পরিবেশমন্ত্রী গোপাল রায় বলেন যে এই পরিকল্পনা অবিলম্বে কার্যকর হবে ।এর মূল উদ্দেশ্য হলো দূষণ নিয়ন্ত্রণে জনগণের অংশগ্রহণ বাড়ানো, ড্রোন ব্যবহার করে দূষণের উৎস শনাক্ত করা এবং তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া।